মুরাদের সঙ্গে মাহিয়া মাহির ফোনালাপ ফাঁস, যা বললেন মাহি

Mahiya Mahi with Minister Murad Hasan and Emon

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে চিত্রনায়ক ইমন ও নায়িকা মাহিয়া মাহির মধ্যকার কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছে। এবার সেই ইস্যুতে মুখ খুললেন ঢালিউডের চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

ওমরাহ করার জন্য মাহিয়া মাহি এখন সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। সৌদি আরব থেকেই তার ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

মাহিয়া মাহির প্রতিক্রিয়া

ভিডিও’র ক্যাপশনে মাহিয়া মাহি লিখেছেন, ‘বিকৃত এবং কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার ও ভাষার প্রতিত্তোরের ভাষা আমার জানা ছিল না, নম্রতা আমার পারিবারিক শিক্ষা…।’

ভিডিওতে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি মাহিয়া মাহি। আমি এখন হারাম শরিফে আছি, মক্কাতে। সবাই নিশ্চয় জানেন যে আমি ওমরা পালন করতে এসেছি। এজন্য ফোন-কল রিসিভ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইবাদত করতে এসেছি, ইবাদত ঠিকমতো করতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেটা বলার জন্য ভিডিওটা করছি সেটা হচ্ছে যে…। আমি সেদিনও ভীষণ বিব্রত ছিলাম, নিজের আত্মসম্মান বোধে কতটুকু আঘাত লেগেছে, তা আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানেন এবং আজকেও আমি ভীষণ বিব্রত। আমি নিজের কাছে নিজেতো ছোট হয়েছিই দেশবাসীর কাছে আরও একবার ছোট হলাম। কিন্তু আপনারা নিজের থেকে একবার চিন্তা করে দেখবেন যে এই ভাষার প্রতিউত্তর অথবা এই ব্যবহারের প্রতিউত্তর আমার আসলে কি দেওয়া উচিত ছিল? আদৌ আমি আসলে আমার বলার ভাষা সেদিন ছিল না। আমি সেজন্যই কোনো প্রতিবাদ সেদিন করিনি..নিজের মতো করে যেভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যায় সেভাবেই পাশ কাটিয়ে গিয়েছি।’

গতকাল ফেসবুকসহ অনান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে এর পর থেকে দেশের মিডিয়া জগত উত্তাল। মূলত এই অডিও ক্লিপটি ছিল একটি ফোনালাপ। সেই ফোনালাপের এক প্রান্তে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং অপর প্রান্তে ছিলেন চিত্রনায়ক ইমন ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

সেই ফোনালাপে খুব অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে দেখা করার জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। প্রতিমন্ত্রী চিত্রনায়ক ইমনকে তিনি বলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে আসেন। এরপরে কি হয়েছিল তা আর ফোনালাপে আর শোনা যায় নি। মাহিয়া মাহি প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এর সাথে দেখা করতে গিয়েছিল কিনা তা জানা যায় নি।

চিত্রনায়ক ইমনের প্রতিক্রিয়া

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন চিত্রনায়ক ইমন। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে ট্রল করতেছেন। কেউ কেউ তাকে দালাল উপাধিও দিয়েছেন। এ অবস্থায় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।

উল্লেখ্য, চিত্রনায়ক ইমন ফোনালাপটির সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন এইটি সত্য ঘটনা, তবে এটি সাম্প্রতিক নয়, বছর দুই আগের।

চিত্রনায়ক ইমন বলেন, ‘আমি খুব হতাশ হচ্ছি যারা আমাকে চেনেন ও জানেন তারাও আজেবাজে মন্তব্য করছেন। এত বড় একজন মন্ত্রী যখন আমাকে কল দেন আমি তো তাকে এড়িয়ে যেতে পারি না। সবাই তো অডিও ক্লিপটি শুনেছেন। সেখানে মানুষের গলার স্বর শুনলেও তো বোঝা যায় কে কোন অনুভূতি নিয়ে কথা বলছেন।’

“আমাকেই ওই রাতের আগের দিনও তিনি কল দিয়েছিলেন। আমি ধরতে পারিনি। ওইদিন রাতে ওয়াজেদ আলী সুমন ভাইয়ের ‘ব্লাড’ সিনেমার মিটিং করছিলাম। তখন উনি (প্রতিমন্ত্রী) হঠাৎ ফোন দেন। অডিওতে কিন্তু আছে উনি প্রথমেই বলেছেন, ‘তুই ফোন ধরস নাই কেন?’ আগের দিন ফোন ধরিনি বলে রেগেছিলেন।” 

“একজন মন্ত্রী বারবার ফোন দিচ্ছেন আমি না ধরে তো থাকতে পারি না। তাই অনুষ্ঠানের মধ্যেই ধরেছি। বাকি আলাপ তো সবাই শুনেছেন। উনার আলাপ শুনেই কিন্তু আমি বাধ্য হয়ে বলেছি, ‘হ্যাঁ, ভাই আসতেছি। দেখছি ভাই’। খারাপ কিছু কিন্তু বলিনি।”

উনি কল দেওয়ার পর অনেক সময় পার হয়ে গিয়েছিল, আর আমি কিন্তু বারবার বলছি, ‘দু’মিনিট ভাইয়া, নামছি’। আমি চাচ্ছিলাম অনি যেন ফোনটা রেখে দেয়। কারণ এরপর আমি মাহির হাতে ফোন দিয়ে ডিরেক্টরের সঙ্গে আলাপ করছিলাম। এইসময় মাহির সঙ্গে কি নিয়ে আলাপ হয়েছে সেটা কিন্তু আমি জানতাম না, আর মাহিও এই বিষয়ে আমাকে কিছুই বলেনি। আমার জানার অপশনও ছিল না। এখন অডিও ক্লিপ্টা শুনে বুঝতে পারছি সেদিন মাহি কতোটা বিব্রতকর অবস্তায় পরেছিল।

সত্যি বলতে ওই মুহূর্তে ফোন আসাটা আশা করিনি। আর আমি বা মাহি কেউই কিন্তু যায়নি পরে। আমি শুধু ওই সিচুয়েশনটা ট্যাকেল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এখন একজন মন্ত্রী ফোন দিলে তার সঙ্গে বেয়াদবি করা যায় না, তাকে যা খুশি তা বলা যায় না। ভেবেছিলাম একটু পরে তিনি সব ভুলে যাবেন এবং তাই হয়েছিল। এই বিষয়ে তিনি আর পরে কোনো কথা বলেননি।’

ইমন জানান, সেই দিনের মিটিংটা হয়েছিল বনানীর একটি রেস্তোঁরায়। এরপর ইমন ও মাহি দুজনই যার যার বাসায় চলে যান। 

ইমনের বলেন, একজন তথ্য প্রতিমন্ত্রী যেকোনো শিল্পীকে ফোন দিতেই পারেন, এইটা খবই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য, তিনি নিজেও হতাশ মাহিয়া মাহির সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর এমন কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ শুনে।

ইমন বলেন, ‘অনেকে আমাকে নিয়ে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছেন। আমি দীর্ঘদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। আমাকে সবাই চেনেন ও জানেন। কি করে তারা আমাকে নিয়ে এসব বলছেন আমি বুঝে উঠতে পারছি না। আশা করি সবাই বিবেক দিয়ে সিচুয়েশনটা বোঝার চেষ্টা করবেন।’

এদিকে নায়িকা মাহিয়া মাহি বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করতেছেন। স্বামীর সঙ্গে ওমরাহ পালন করতে গিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ আসবেন তা এখনও জানা যায়নি।

আরও পডুনঃ
গান গেয়ে প্রশংসিত হলেন অভিনেত্রী প্রভা
বয়স বাড়লেও এখনও প্রেমের বয়স হয়নি : দীঘি
লুঙ্গি পরা নিয়ে সমালোচনা, ক্ষোভ ঝাড়লেন পরীমনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *