পীরের অনেক মুরিদ নামাজ পড়ে না কেন?

By | April 28, 2023
পীরের মুরিদরা নামাজ পড়ে না কেন?

এই পোষ্টে পীরের অনেক মুরিদ নামাজ পড়ে না কেন উত্তর জানতে পারবেন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারবেন।

পীরের অনেক মুরিদ নামাজ পড়ে না কেন?

আমাদের মধ্যে অনেকের প্রশ্ন থাকে অনেক সময় দেখি পীরের অনেক মুরিদরা নামাজ পরে না

মানুষের ভিতরে এটাও কথা হয় পীরের মুরিদরা দেখা যায় নামাজ পরে না। আসলে এরকমটা নয়, কোন কামেল পীর মুরিদকে নামাজ পড়তে নিষেধ করে না। তবে এটাও আপনাকে বুঝতে হবে একটি হাসপাতালে সবাই চেকআপ করাতে যায় না, অনেক রোগিও যায়। একজন পীরের দরবারে ভাল আলেম যেমন যায় ঠিক তেমনি খারাপ মানুষও যায় যারা আস্তে আস্তে ভালর পথে আসে।

আমার এক কোচিং এর স্যার আমাদের উদ্দেশ্যে বলে আমি যা কিছু বলি কোচিং এ সবই তোমাদের শিক্ষার জন্য কাজে আসবে আমি যদি গল্পও বলি তাও ধরে নেবে সেটা শিক্ষনীয় ছিল।

তেমনি ভাবে একদিন একটি গল্প বলা শুরু করে দেন। স্যার বলেন দেখ একজন খুব কিপটা লোক ছিল সে এত কিপটা যে ভিক্ষুককেও ভিক্ষা দিতে চাইত না। তো এক ভিক্ষুকও জেদি ছিল সে চিন্তা করল সে কিপটা লোকের বাড়ি থেকে ভিক্ষা নিবেনই, সকাল বেলা যখন কিপটা লোকটি অফিসে যাই তখন ভিক্ষুক তার বাড়িতে ভিক্ষা চাই কিন্তু কিপটা লোক ভিক্ষা দেয় না। আবার কিপটা লোক যখন সন্ধ্যার পর অফিস থেকে আসে তখন এসে দেখে ভিক্ষুক তার বাড়িতে এখনো বসে আছে ভিক্ষা নেওয়ার জন্য। কিপটা লোক চিন্তা করল রাত হয়েছে এখনো ভিক্ষুক যাই নাই, তাকে তারাব কি করে, তখন তার স্ত্রীকে বলল একমুষ্টি মাটি দিয়ে আস ভিক্ষুককে সে অন্ধকারে বুঝবে না চাউল মনে করে চলে যাবে। সেই কথায় স্ত্রী একটি পাত্রতে মাটি ভরে ভিক্ষুককে দেয় সেই মাটি নিয়ে ভিক্ষুক চলে যায়। যেতে যেতে সামনেই ভিক্ষুকের সাথে একজনের দেখা, লোকটি বলল আপনি সারাদিন কিপটা লোকের বাড়িতে বসে থাকলেন ভিক্ষা নিতে সে কি ভিক্ষা দিল আপনাকে? ভিক্ষুক বলল আমাকে একমুষ্টি মাটি দিয়েছে। লোকটি বলল এই মাটির জন্য সারাদিন বসে রইলেন কিপটার বাড়ি? ভিক্ষুক বলে আজ মাটি দিয়েছে কাল চাউল দিবে এরপর টাকা দিবে, দিতে দিতে দেওয়ার হাত বাড়বে দেওয়ার অভ্যাস হবে। ভিক্ষুক আবার পরের দিন যায় কিপটার বাড়ি, কিপটা তখন চিন্তা করল সারাদিন ভিক্ষুক বাড়িতে বসে থাকে ভিক্ষা নেওয়ার জন্য ভিক্ষা দিয়ে দেই। সেদিন চাউল দিল, পরেরদিন আবার ভিক্ষুক আসল তখন টাকা দিল এভাবে করে করে কিপটা ভিক্ষা দেওয়া শুরু করল আর কিপটামি ছেড়ে দিল।

তখন স্যার বলল আমি তোমাদের পড়া দিব আজ যদি একটু পার কাল সম্পুর্ন পারবে। আস্তে আস্তে আমার পড়া শিখবেই। কেউ ১০ বার পড়ে মুখস্ত হয় কেউ ১০০ বার পড়ে পড়া মুখস্ত হয়, তবে মুখস্ত হবেই।

উল্লেখ্যঃ ঠিক তেমনি ওলী আওলীয়াদের দরবারে যে কোন ইবাদত বা দেখমত ও কাজই আল্লাহকে চিনিবার পথ। ওলী আল্লাহর দরবারে যদি ওই স্যারের মত পড়ার সময় যদি ফাও গল্পের মতও কাজ হয়ে থাকে তাহলেও সে শিক্ষা আল্লাহকে চিনিবারই শিক্ষা।

আবার ওলী আল্লাহর দরবারে গেলে আপনি ওই কিপটার মত করে আস্তে আস্তে ইবাদত করতে শিখবেনই। ওই ভিক্ষুকের মত করে ওলীআল্লাগন আপনার কাছ থেকে ইবাদত করাইয়া নিবেনই। শুধু সময়ের ব্যাপার।

শেষ কথাঃ

আমাদের দেশে যত ধরনের ইসলামিক দল আছে বা যারা ইসলাম প্রচার করার জন্য দলভুক্ত রয়েছে তাদেরকে দেখবেন নামাজি লোকদের তাদের দলে নিয়ে থাকে। বা নামাজি লোকদের ইসলামের দাওয়াত দেয় এবং কিছু কিছু বেনামাজিকে নামাজের দাওয়াত দিয়ে তাদের দলে নেয় নামাজ পড়ার কথা বলে। তারা শুধুমাত্র নামাজের দাওয়াত দেয়, কেউ যদি নামাজ না পড়ে তাহলে তাকে তাদের দলে নেয় না।

কিন্তু খাঁটি পীর আউলিয়া সকল তিঁনিরা নামাজি বেনামাজি সকলকে তিঁনিদের দরবারে যেতে বলে। বিভিন্নভাবে দরবার মুখী করার চেষ্টা করে প্রথমে। এরমধ্যে অনেকেই প্রথমেই নামাজ পড়ে আবার কেউ কেউ পরবর্তীতে ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। এভাবেই নতুন লোক আসছে প্রতিনিয়ত পুরানো লোক গুলোও হেদায়েত হচ্ছে। এভাবেই চলছে।

আমার দেখা মতে খাঁটি পীর তাঁর মুরিদানদের প্রথমেই ঈমানি ট্রেনিং দেন, এর মধ্যে আদব বুদ্ধি মুহাব্বত সাহস। নামাজ পড়েও জাহান্নামে যেতে পারে ঈমান না থাকার কারণে। আবার ঈমান থাকার কারণে আল্লাহর জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেতে পারে।

বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব বলেন-

“যদি পরিপূর্ণ মুসলমান হতে চাও তবে শরীয়তের যাবতীয় হুকুম মানিয়া চল। তাহা হইলে মারেফতের জ্ঞান তোমাদের জন্য সহজ হইবে।”

“মুখে বলছেন, সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা অথচ অন্তরে দুনিয়াবী চিন্তা – এমন নামাজে কোন ফল নেই। একে লিপ-সিমপ্যাথি বলা হয়। নামাজ পড়তে হবে হুজুরে কালবে ডুব দিয়ে।”

পীরের মুরিদ হওয়া কি বাধ্যতামূলক, পীরের হাতে বায়াত হওয়া ফরয কি, পীর মানা কি জায়েজ, পীর ধরা কি ফরজ, পীর মুরিদ কি?, পীর ধরার অকাট্য দলিল, খাটি পীরের পরিচয়, এ সম্পর্কে জানতে নিচের লিংক গুলোতে গিয়ে আর্টিকেল গুলো পড়তে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *